এক মেঠো গ্রামের গল্প,,,


|🌴গ্রামের 'বটতলা' খেলে বেড়ায় শৈশব🌱|
-কল্যাণ অধিকারী
একটা দিগন্ত টানা মস্ত মাঠ। মাঝে লম্বা আকাশ প্রমাণ তাল, খেজুরের সারি। পাতায় দিব্যি সুখে বাবুই এর দল। দূরে লাল মাটির রাস্তা দিয়ে কালো মোষ গাড়ি টেনে চলেছে। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়া জল সমস্ত কষ্ট বোঝাতে চাইছে।
মাঠে এবার ধান যে জবরদস্ত হয়েছে বলা যাবে না। বৃষ্টি নেই, সেচের জল তাও অনিশ্চয়তায় ভরা। তবুও চাষ করে ওরা আনন্দে। গায়ে তেল মেখে পুকুরে ডুব দেয়। যদিও তার আগে থেকেই পাড়ার ছেলের দল ডুব সাঁতার দিয়ে জল গুলিয়ে দিয়েছে। স্কুলে যাবার তাড়া নেই। ইন্টারনেট বোঝে না। শুধু জানে প্যাক মারতে হয় তবেই ক্রিকেট ম্যাচ দেখা যায়।
গোবর দেওয়া দেয়াল পাশ কাটিয়ে পাড়ায় অচেনা কেউ ঢুকলে ফিসফিসিয়ে কথা শুরু হয়ে যায়। অমুকের ঘরে কে এলো গো পরানের মা, হাতে মিষ্টি নিয়ে? ওই যে গো ইত্যাদি মূলক কথাবার্তা। বলা চলে একটা জলজ্যান্ত খবর নিয়ে আলোচনায় আস্ত আদিসপ্ত গ্রাম। কষা দুপুরে গায়ে রোদ লাগিয়ে কয়েত বেল নুন, কাঁচা লঙ্কা, চিনি দিয়ে মাখিয়ে জিভে দিয়ে ৯৮.৩ রেডিও মির্চি ইট'স হট।
সাত সকালে খোলা আকাশের নিচে খেজুর পাতার চাটাই মিলে, ভূগোলের পাতা, ইতিহাসের খাতা, বাংলা ব্যাকরণ, ইংরাজি মানে খুলে আস্ত একটা কোচিং সেন্টার। বোতাম খোলা জামায় সেপটিপিন লাগানো। কলমের কালির ডগায় শিক্ষিত হচ্ছে রবিঠাকুর, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর, নজরুল। পারবেন না শীতল গ্রামের চিত্র কংক্রিটের শহরে মেলাতে।
©-কল্যাণ অধিকারী

Comments

Popular posts from this blog

গল্প যখন সত্যি তৃতীয় পর্ব

শরৎচন্দ্রের বাড়ি একদিনে'র গন্তব্য

শান্ত দামোদর, পাখিদের কলকাকলি, বাড়তি পাওনা ভারতচন্দ্রের কাব্যতথ্য