চিত্রিত লিপি আঁকাবাঁকা পাহাড়ের সানুতলে


জন্মদিনে কবি জয় গোস্বামী 

-কল্যাণ অধিকারী
সেদিন ছিল পৌষ মাস। ময়দান মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে একের পর সিগন্যাল পার করে পৌঁছে গিয়েছিলাম নন্দনে। প্রায় নিয়ম করে মাসে বেশ কয়েকবার আসা হলেও সেবার হয়েছিল একটু অন্যরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন।
ছোটবেলা থেকে শিরা উপশিরা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে রবিঠাকুর। তবুও বিশ্ববিদ্যালয় চৌকাঠে দাঁড়িয়ে পেয়ে গিয়েছিলাম হাতে।
'অতল তোমার সাক্ষাৎ পেয়ে চিনতে পারিনি বলে / হৃদি ভেসে গেল অলকানন্দা জলে।' বাকিটা তাঁর কবিতা চমৎকার চিত্রকল্পে, উপমা এবং উৎপ্রেক্ষায় ঋদ্ধ।
তিনি কবি জয় গোস্বামী। নদীয়া জেলার রানাঘাট থেকে বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে আবির্ভূত একজন আধুনিক বাঙালি কবি। প্রথম কবিতা লেখা শুরু শৈশবে। আঠারো বছরে পৌঁছাবার আগেই নিয়মিত কবিতা লিখতে শুরু করে দেন। সময় যত এগিয়েছে ঝুলি ভরেছে কবিতা ও সাহিত্যে। এমন একজন কবি মানুষের সাক্ষাৎ হতে চলেছে। মন জুড়ে তখন শুধুই আবেগ।
বাংলা আকাদেমি মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে পড়লাম। সামনে তখন কলম কথা বলা কবি। কোথা থেকে শুরু করবো ভাবার সময়টুকু নেই। দু চারকথা বলার ফাঁকে ডাইরির পাতায় অটোগ্রাফ সমেত সম্পূর্ণ। স্যরের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার ধৃষ্টতা জানিনা কোথা থেকে চলে এসেছিল। আজ আরও একটা ১০ নভেম্বর। শেষ রাতে লিখছি এমনি এক স্মৃতি যা বয়ে নিয়ে যেতে চাই বহু কাল, বহু পক্ষ। "যতক্ষণ না সোজাসুজি ছিঁড়ে যাচ্ছে
টানো!
একে বলে সোজা কথা |
এরই নাম ক্ষমতা দেখানো!"
অনামিকা কই? কাজল কোনদিকে গেল?
সায়ন কোথায়?
পিছনে তাকিয়ে দেখি সঙ্গে কেউ নেই
প্রান্তরের মধ্যে এক যূপকাষ্ঠ—অর্ধেক প্রোথিত—
ধারে কাছে কোনও ধড় নেই
মুণ্ডুরা উধাও |
আজি এ রাতে ভেসে আসছে আপনার জন্মদিনের সুরভি। সহস্র জ্যোতি প্রতিফলিত হোক আপনার জীবনে।
প্রণাম নেবেন স্যর।
©-কল্যাণ অধিকারী

Comments

Popular posts from this blog

গল্প যখন সত্যি তৃতীয় পর্ব

শরৎচন্দ্রের বাড়ি একদিনে'র গন্তব্য

শান্ত দামোদর, পাখিদের কলকাকলি, বাড়তি পাওনা ভারতচন্দ্রের কাব্যতথ্য