বাউড়িয়া থেকে পাঁচলা তিন কিমি এলাকায় ৫০ টি জগদ্ধাত্রীপূজা,

প্রতিমা, মণ্ডপ এবং আলোকসজ্জা দেখতে জনপ্লাবন
কল্যাণ অধিকারী, হাওড়া


মোড়ের মাথায় প্রাচীন খিরিশগাছ। পাশে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়গপুর শাখার রেল লাইনের উপর ব্যস্ত স্টেশন। ট্রেন থেকে যাত্রীরা নেমে ৬নম্বর জাতীয় সড়ক পৌঁছাতে অটো ধরে। তবে এই কটাদিন অটো চলাচল দুপুরের পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। কারণটা তিন কিলোমিটার পথে প্রতিটি প্যান্ডেলের সামনে মানুষের লম্বা লাইন। মুখেমুখে মিনি চন্দননগর বলেই অভিভাষণ করা হয়ে থাকে।

হাওড়া শহর থেকে ২৫ কিমি দূরত্ব। স্টেশন ও এলাকার নাম বাউড়িয়া। বারোয়ারি দুর্গাপূজা হলেও মানুষ আনন্দ আটকে রাখে জগদ্ধাত্রী পূজা অবধি। বাউড়িয়া থেকে পাঁচলার মধ্যে তিন কিমি পথ জুড়ে প্রায় কুড়িটার বেশি বারোয়ারি পুজো। রয়েছে বিভিন্ন ক্লাবের পুজো। থিমের ছোঁয়ায় মানুষের মন আটকা পরে। ছোট বড় সকলের কথা ভেবে মন্ডপ সজ্জার চিন্তাভাবনা করা হয়। খিরিশতলা থেকে বুড়িখালি এক কিমি পথে প্রায় ১০টি পুজো হচ্ছে। প্রতিমার উচ্চতা ৮ফুটের মতো। রয়েছে বাহারি আলোর সাজসজ্জা।

পুজোর উদ্বোধনের জন্য ভিআইপি দের আনাগোনায় গমগম করতে থাকে। বাউড়িয়া থেকে ৬নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে পাঁচলার মোড়ের মধ্যে পঞ্চাশের মতো পুজো হচ্ছে। তবে এলাকাবাসীর কথায় বুড়িখালি, বাসুদেবপুর,  ঘোষালচক, বেলকুলাই, সাহাপুর, রঘুদেবপুর, সন্তোষপুর, খয়জাপুর ছাড়াও পাঁচলা মোড়, ধামসিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় বারোয়ারি ও অন্যন্য মিলিয়ে ৪০টির মতো পুজো হচ্ছে।

এখানকার সবথেকে পুরনো পুজো প্রামাণিক পাড়ার জগদ্ধাত্রী পুজো। শুরুটা ১৮৩০ সালে। উদ্যোক্তা দের কথায়, অনেককাল আগের কথা৷ যতটা জানি এলাকার জনা কয়েক যুবকের প্রচেষ্টাতেই শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজো। তখনকার সময় নিজেরাই বাঁশ দিয়ে প্যান্ডেল বেঁধে শুরু করে পুজো। ওসব কথা দাদুদের মুখে শুনেছি। এখন পুজোয় জাঁকজমক ও আড়ম্বরতা বেড়েছে। বাকি পুজোর মতো নয় আমাদের পুজোয় প্রাচীনতার আহবান থাকে।

জগদ্ধাত্রী পুজো বহু হলেও মূলত অষ্টমী থেকে পুজো বসে। নবমীর ভিড় ছাপিয়ে হেঁটে চলা দায় হয়ে যায়। বাউড়িয়া থেকে পাঁচলা মোড় অবধি জলপ্লাবন। গ্রামীণ হাওড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখে বহু পুলিশ ও সিভিক ভল্যান্টিয়ার দের রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দমকলের ইঞ্জিন। বেলকুলাই ও বাসুদেবপুর এলাকায় মেলা বসে। জেলার বিভিন্ম প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন প্রতিমা, মণ্ডপ এবং আলোকসজ্জা দেখতে। ভিড়ে সুপারহিট হাওড়ার মিনি চন্দননগর।

চিত্র
প্রকাশ কোলে,
অর্পনা ঘোষ নস্কর,
সুমন ভাণ্ডারী।

Comments

Popular posts from this blog

গল্প যখন সত্যি তৃতীয় পর্ব

শরৎচন্দ্রের বাড়ি একদিনে'র গন্তব্য

শান্ত দামোদর, পাখিদের কলকাকলি, বাড়তি পাওনা ভারতচন্দ্রের কাব্যতথ্য