সে রাতে তোমায় দেখে


|ঝিরঝিরে ঠাণ্ডা হাওয়ায় চলচ্চিত্রের উষ্ণতা🍃🍁|

-কল্যাণ অধিকারী
রাত বাড়তেই শহরজুড়ে হালকা শীতের ইমেজ। পিটিএস পেরিয়ে দ্বিতীয় সেতুর এপার-ওপার গাড়ির হেডলাইট ছুঁয়ে ভেসে যাচ্ছে হালকা কুয়াশা। দূরে মাথা উঁচিয়ে নবান্ন। টোল প্লাজার গা ঘেঁষে সোজা ১১৭নং জাতীয় সড়ক কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। ধেয়ে আসছে শীতল বাতাস গাড়ির দক্ষিণী জানালার কাঁচে। হৃদয়ের টাচে ভারী হচ্ছে পাশাপাশি দু শরীর। মিউজিক সিস্টেমে বাজছে,
'হো ঠাণ্ডে ঠাণ্ডে ঝোকে জব বালো কো সহলায়ে, 
তপ্তি তপ্তি কিরনে জব গালো কো ছুঁ জায়ে',,,,,
উৎসব শেষে মন খুলে একটু স্বস্তি পেতে নাইট ড্রাইভ আনলিমিটেড উষ্ণতা। কিন্তু কে বলেছে উৎসব শেষ? শহরজুড়ে চলচ্চিত্র উৎসব বেশ মাখামাখি। বাম-ডান একাকার। সৌমিত্র স্যর, প্রসেনজিৎ দাদা সবাই এখন ছাতাপড়া। বুদ্ধদেব বাবুর সাধের নন্দনতত্ত্বে আবদ্ধ চলচ্চিত্র উৎসবে অভিনবত্বের ছোঁয়া দিয়েছে মা মাটি মানুষ। বিমানের দামী সিটে বসে উড়ে এসেছেন বিগ বি ও কিং খান এর মতো খ্যাতিমান অভিনেতা। এখানের টেলি-টলি তারকাদের যোগ্য সঙ্গত। কলকাতা এ কদিন পশ্চিমের কোন হলিউড শহরে পরিণত।
প্রতিদিন দেশ-বিদেশের পঞ্চাশেক ছবি নন্দন সহ বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হচ্ছে। সাদা পর্দায় নামীদামী পরিচালক দের টানটান রঙিন ছবি দেখে শরীর উষ্ণতায় ম ম করছে। নীলাভ চোখের সামনে রক্তিম শরীর। শারদীয়া, দীপাবলি, ভাইফোঁটা মিটে যাওয়া মন খারাপ বাঙালির। দুর! দুর! কে বলেছে এ সব। শহরে চলচ্চিত্র উৎসবে একবার পৌঁছে যান। দেখবেন আপনার মনে আনন্দের ঢেউ বইয়ে দিয়েছে।
পাহাড়ে যখন হাওয়া বয়, কাঠের একমুখী ঘর মাঝেমধ্যে নড়েচড়ে ওঠে। চলচ্চিত্র উৎসব যখন শহরে তখন হাত-পা মেলে শুয়ে থাকে কি বাঙালি! প্রেমিকার হাত ধরে, সিগারেটের ধূয়া ফিরিয়ে, মা উড়ালপুল ধরে প্রচণ্ড বেগে এগিয়ে চলা নন্দনের প্রামাণ্যে। গোটা নন্দন চত্বর জুড়ে গায়ে গা ঘেঁষা ভিড়। ঝিলিক দেওয়া মুখে ঠোঁট কাটা হাসি। কলকাতা যেন সহিষ্ণুতায় উষ্ণতার আগুন জ্বেলেছে।
কানে হেডফোনে,,,
'বাতে এ কাভিনা তু ভুলনা,
কোয়ি তেরি খাতির তো জিরাহা,
যায়েতো কাহিভি এ সোচনা,
কোয়ি তেরি খাতির তো জিরাহা'।
©-কল্যাণ অধিকারী

Comments

Popular posts from this blog

গল্প যখন সত্যি তৃতীয় পর্ব

শরৎচন্দ্রের বাড়ি একদিনে'র গন্তব্য

শান্ত দামোদর, পাখিদের কলকাকলি, বাড়তি পাওনা ভারতচন্দ্রের কাব্যতথ্য