একটা অনুব্রত কে সামলাতে পারছেন না রাজ্য কে কিভাবে?


উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেন, দিদিমনি এখন বিজেপি কে ফলো করছেন!

কল্যাণ অধিকারী, হাওড়া

রাজ্য বিজেপিতে এখনও দিলীপ রাজ চলছে! শনিবার হাওড়ায় বিজেপির কার্যনির্বাহী সভায় অন্তত এমনটাই লক্ষ্য করা গেল। কখনো কর্মীদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দিলেন। কখনও আবার মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে পাগলা হাতির সঙ্গে তুলনা করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

মুকুল রায়ের বিজেপি যোগদান ছিল আশাব্যঞ্জক। যোগদানের পর বছর পার হলেও রাজ্যে তাঁর প্রভাব এখনও আশানুরূপ নয় বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ দের একাংশের। উল্টে দিলীপ ঘোষ যে সর্বময় কর্তা উঠছেন তাও ক্রমশ প্রকাশিত। এ দিন মঞ্চে পাশাপাশি বসেছিলেন মুকুল রায় এবং দিলীপ ঘোষ। কাছে থেকেও অনেকটা দূরেই রয়ে গেলেন। আলোচনা হলেও সেই নৈকট্য উধাও।

মঞ্চে যে ফেস্টুন লাগানো হয়েছিল তাতেও স্থান হয়নি মুকুল রায়ের। ফেস্টুনের একদিকে নরেন্দ্র মোদি এবং অমিতা শাহ। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ এর ছবি। কিছুটা হলেও ভ্রু কুঁচকেছে মুকুল অনুগামীরা। বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। সেক্ষেত্রে সায়ন্তন বসু, মুকুল রায়, রাহুল সিনহা, লকেট চট্টোপাধ্যায়, জয় বন্দ্যোপাধ্যায় সহ রাজ্যের একাধিক নেতাকে কর্মীদের লড়াইয়ে অক্সিজেন জোগাতে হবে। কিন্তু জোটবদ্ধভাবে না থাকলে রাজ্য ভিত্তিক লড়াই কিভাবে সংগঠিত হবে? একটা বীরভূমে অনুব্রতর বিরুদ্ধে লড়াই কি আদৌ সহজ হবে ? সেই অনুব্রত যিনি প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “পুলিশে উপরে বোম মারুন।” সেই অনুব্রতের বিরুদ্ধে কিভাবে লড়াই চালাবে দল?

এ দিন সাংবাদিক দের এসব প্রশ্নের পাশাপাশি জিজ্ঞাসা করা হয় অনুব্রত ফ্যাক্টর কতটা? প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেন, "ফ্যাক্টর কি ফ্যাক্টর না তা আগে ওঁনার পার্টি কাছে ঠিক করুক। যেভাবে ওখানে খুন খারাবি চলছে, মারপিট চলছে, তা ওর পার্টি ঠিক করবে। বিজেপির কাছে কেউ কোন ফ্যাক্টর না। বিজেপির কাছে ফ্যাক্টর সাধারণ মানুষ।"

এ দিন হাওড়া শরৎ সদনে বিজেপি'র সভা কার্যনির্বাহী হয়। যদিও সভার মূল নজর ছিল রথ যাত্রায়। ভোটের জন্য অমিত শাহ রাজ্যে আসতে সময় পাচ্ছেন না। ফলে তিনটি রথযাত্রার তারিখ ৭ দিন পেছানো হয়েছে বলে জানান রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তবে মুখ্যমন্ত্রীর রাবণ যাত্রা নিয়ে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, "বিজেপির ঠিক আছে এবং বিজেপির এজেন্টরাও ঠিক আছে, ওরা বিজেপিকে অনুকরণ করছে।"

তবে দিলীপ ঘোষ থাকবে আর কুকথা হবে না তা কি সম্ভব। এ দিন বলেন, "ওরা সুচোর কীর্তন না ব্যাঙ এর কীর্তন করবে সেটা আমরা দেখব।" তবে সবার উর্দ্ধে উঠে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে পাগলা হাতির সঙ্গে তুলনা করেন দিলীপ ঘোষ। এতকিছুর পরেও লক্ষ্য ছিল মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষ-এর সম্পর্ক ঠিক কতটা আদানপ্রদানে রয়েছে। শেষ বেলায় একটা কথাই উঠে আসলো লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির ব্যাটন থাকছে আপাতত দিলীপ ঘোষের শক্ত হাতে। মুকুলের থেকে অনেক কদম দূরে।

Comments

Popular posts from this blog

গল্প যখন সত্যি তৃতীয় পর্ব

শরৎচন্দ্রের বাড়ি একদিনে'র গন্তব্য

শান্ত দামোদর, পাখিদের কলকাকলি, বাড়তি পাওনা ভারতচন্দ্রের কাব্যতথ্য