অনোখা শিশু দিবস


|মুক্তিযুদ্ধের লড়াই চালাচ্ছে আজকের শিশুরা🍃|


-কল্যাণ অধিকারী

শিশু দিবস! মহান দেশে শিশুদের মুক্তিযুদ্ধ বললেও বোধহয় ভুল বলা হবে না। কাঁধে ঝোলা ব্যাগে ভরা পাঠ্যপুস্তক। মাথার উপর হিমালয়ের মতো চাপ। স্কুলে প্রথম হবার এবং সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবার লড়াই। পাকা মস্তিষ্কের মানুষদের কথায় আজকের শিশুরাই নাকি আগামীদিনের সক্ষম নাগরিক।
ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত এক ৮-৯ বছরের কৈশোর ঈশান আওয়াস্তির কথা মনে পড়ে। বই পড়তে তো দূর বানান করতেও পারেনা। পিতার শাসন, মায়ের চোখের জল পার করে বোর্ডিং স্কুলে যেতে হয়। কারণ দাদা উহানের মতো ক্লাসের সব বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেতে হবে। শিক্ষক থেকে শুরু করে বন্ধু-বান্ধব, বাবা সবাই তার উপর বিরক্ত। একদিন সেই ঈশান হয়ে ওঠে দশের মধ্যে একজন। কিন্তু কিভাবে? সেটাই সবাইকে শিখিয়েছেন দুরন্ত মনের স্যর আমির খান। মোদ্দাকথা শিশুদের মনের কথা পড়তে হয়, খাতায় লিখতে হয় সেটা পরিবার কেই বুঝতে হবে।
নরেন বা বিলে, রবিঠাকুর, বিদ্যাসাগর মহাশয় জন্মজন্মান্তর সমাজের আইকন। বাংলা মাধ্যমেই পড়ে আমাদের আদর্শ হয়েছেন। ছোট্ট শরীরে পিঠে কেজি-কেজি ওজনের বইয়ের ব্যাগ নিয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন কি জানি না। কারণ অবশ্যই আমি তখন জন্মাই নি। তবে আজ শিশু দিবসে বলতে বাধা নেই, সমাজের সবচেয়ে দূর্বল অংশ বোধহয় আজকের শিশুরাই। ছোট থেকেই তাদের মেশিনের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। স্কুল হোক বা ফুটপাতের দোকান কৈশোর হাতে মস্তিষ্ক এবং শৈশব দিয়ে উজাড় করে দিতে হচ্ছে।
সোনাগাছি জুড়ে কত শিশু সন্ধ্যায় চলে যায় অন্যত্র খেলতে। রাত বাড়লে ঘুমঘুম চোখে ফিরে আসে ঘরে। কয়লার কঠিন আঁচ জ্বালানো মা তখন ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত। কোনক্রমে শরীর সোজা করে শৈশবের মুখে খাবার তুলে দেবার আর এক কয়লায় উনুন জ্বালায়। শিশু দিবস একটি দিন আসে। স্কুলে হাফছুটি হলেও মুক্তিযুদ্ধের লড়াইয়ের শেষ কোথায়। তবে স্বস্তি বোধহয় সেদিন মিলবে যেদিন দেশ পাবে স্যর আবদুল কালামের মতো বিজ্ঞ কোনও নাগরিক। সেই দিনটার অপেক্ষায় 'শিশু দিবস'।
©-কল্যাণ অধিকারী

Comments

Popular posts from this blog

গল্প যখন সত্যি তৃতীয় পর্ব

শরৎচন্দ্রের বাড়ি একদিনে'র গন্তব্য

শান্ত দামোদর, পাখিদের কলকাকলি, বাড়তি পাওনা ভারতচন্দ্রের কাব্যতথ্য