মন্দিরের আকুলতা
আকাশছোঁয়া প্রত্যাশা তবুও অযোধ্যায় ফিরল না বসন্ত !
-কল্যাণ অধিকারী
ছাব্বিশটা বসন্ত অন্ধকার সময়ে পার করেছে অযোধ্যা। রুপমুগ্ধতার সরযু নদীর তীর, হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী, ছেড়ে বাবরি মসজিদ ও রাম মন্দির আলোচ্য বিষয়। এই নিয়েই পঁচিশটা বছর পার করে চাপা অস্বস্তি ছেয়ে রয়েছে গোটা অযোধ্যা জুড়ে।
ক'টা দিন পর নতুন বছর। ভোটের দামামা বাজবে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী জুড়ে। এর মাঝে গলা খাকারি দিয়ে উঠেছে মন্দির নির্মাণ। এ যেন ভাবার আগেই "ওরম মনে হয়" নিয়ে টিনএজ-এর চরম ব্যস্ততার মতো। মন্দির নির্মাণের জন্য বহুবার যজ্ঞ হয়েছে দেশজুড়ে। যজ্ঞের পোড়া কাঠ ঠান্ডাও হয়েছে নিয়মানুসারে। কিন্তু শুধু যজ্ঞের কালি তুলে কপালে টিকা পড়লে যে কাজ হবে না বুঝে গিয়েছে দেশবাসী।
মন্দির চাই মন্দির! ধীরে ধীরে জাগ্রত হচ্ছে রাজনৈতিক আন্দোলন। ঢেউ উঠছে সরযূ নদীতে। গেরুয়া বসনার মুখ্যমন্ত্রী যোগী, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল। অযোধ্যা জুড়ে ধর্মের খোসা ছাড়ানো আন্দোলন। ছাব্বিশ বছর ধরে ধর্মপ্রাণ অযোধ্যাবাসীর মতো দেশবাসী মিথ্যে লম্প ঝম্প বোধহয় চাইছে না। সেটা আমাদের দেশের বড় দলের নেতারাও বুঝেছেন। মন্দির স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিক সরকার এটাই মোদ্দা কথা।
আমি একজন হিন্দু অবশ্যই আমিও বিশুদ্ধ শুভাকাঙ্ক্ষী মন্দির হবার পক্ষে। তবে এটাও ঠিক প্রতিবেশীকে কষ্ট দিয়ে প্রাসাদ বানাবার চেয়ে, তার সঙ্গে মনকষাকষি দূর করে প্রাসাদ বানানোটা শ্রেয়। কারো চিন্তায় নির্ঘুম রাত্রিবাস আমার শান্তির প্যালেসে বজ্রপাত ডেকে আনতে বোধহয় দেরি করবে না।
যতবার প্রতিবেশী আমার প্রাসাদের দিকে তাকাবে তার বুকটা হু হু করে উঠবে। বাড়বে ঈর্ষা। যা থেকে সৃষ্টি হবে দ্বন্দ্ব। শেষে লড়াই। মন্দির গড়ে উঠুক পাশপাশি আজানের সুর টাও যেন শোনা যায়।
-কল্যাণ অধিকারী
চিত্রঃ গুগল
Comments
Post a Comment